এশিয়া প্রশান্ত অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র, চীন আর জাপানের পরেই চতুর্থ অবস্থানে ছিলো ভারত, কিন্তু ২০২০ সালে ভারত তার সেই অবস্থান হারিয়েছে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
সিডনি-ভিত্তিক লোয়ি ইন্সটিটিউটের ২০২০ সালের এশিয়া পাওয়ার ইনডেক্সে ভারতের ক্ষমতার স্কোর কমে ৩৯.৭ এ নেমে এসেছে, ২০১৯ সালে যেটা ছিলো ৪১। গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে বিবেচিত হওয়ার জন্য ন্যূনতম স্কোর ৪০ হতে হবে।
লোয়ি ইন্সটিটিউটের রিপোর্টে বলা হয়েছে, “এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল দেশ এখন ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চলে মধ্যম পর্যায়ের শক্তিগুলোর মধ্যে উপরের দিকে অবস্থান করছে”। এতে আরও বলা হয়েছে যে, আগামি বছরগুলোতে ভারতের আগের গুরুত্বপূর্ণ শক্তির মর্যাদা আবার পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চলের সবগুলো দেশের মধ্যে ভারত তার প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা খুইয়েছে এবং এর পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হলো কোভিড-১৯ মহামারী।
এতে আরও বলা হয়েছে যে, “চীনের সাথে জনসংখ্যার বিচারে সামঞ্জস্যপূর্ণ একমাত্র দেশ হলো ভারত, তবে আগামী বছরগুলোতে চীনের সমপর্যায়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করাটা অবাস্তব। কোভিড-১৯ মহামারী ভারতীয় সমাজের উপর যে প্রভাব ফেলেছে, সেটা এশিয়ার দুই জনবহুল দেশের শক্তির মধ্যে ব্যবধানই শুধু বাড়িয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, “বর্তমান ধারা অনুযায়ী, এই দশকের শেষ দিকে হয়তো ভারত চীনের অর্থনীতির ৪০ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে”।
লোয়ি ইন্সটিটিউট বলেছে, মহামারীর আগে ২০৩০ সালের জন্য ভারতের অর্থনীতির যে ভবিষ্যদ্বানী করা হয়েছিল, সেটা এখন ১৩% কম হবে।
এতে বলা হয়েছে, “এটার কারণে ভারতের ভবিষ্যৎ স্কোর প্রায় ৫ পয়েন্ট কমে যাবে”।
প্রতিবেদনে অবশ্য বলা হয়েছে যে, এশিয়াতে ভারতের কূটনৈতিক প্রভাব বাড়ছে এবং এ অঞ্চলে আরও বড় ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে তাদের যে আকাঙ্ক্ষা, ২০২০ সালে সেটা স্পষ্ট হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে কূটনীতিক প্রভাব বিস্তারের দিক থেকে দক্ষিণ কোরিয়া আর রাশিয়াকে ছাপিয়ে গেছে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের পরে চতুর্থ স্থানে রয়েছে এখন দেশটি।
লোয়ি ইন্সটিটিউটের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্ক আর অর্থনৈতিক সম্পর্ক – এ দুটো হলো ভারতের ক্ষমতার সবচেয়ে দুর্বল দুটো দিক।
এই প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, “প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে, ভারতের এক ধাপ উন্নতি হয়েছে এবং এখন তাদের অবস্থান হলো সপ্তম। মূলত আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা কূটনীতির অগ্রগতির প্রতিফলন ঘটেছে এখানে। বিশেষ করে কোয়াড নিরাপত্তা গ্রুপের সাথে তৎপরতার কারণে এই অগ্রগতি হয়েছে। কোয়াডের সাতে আরও রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, জাপান আর যুক্তরাষ্ট্র। অর্থনৈতিক সম্পর্কের দিক থেকে ভারত সাত নাম্বারে নেমে গেছে। অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে গেছে। আঞ্চলিক বাণিজ্য সমন্বয় প্রচেষ্টায় ব্যার্থতার কারণে ভারতের এই অবনতি হয়েছে”।
অবস্থানের এই অবনতির কারণ হিসেবে রিপোর্টে রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ (আরসিইপি) থেকে ভারতের বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা বলা হয়েছে।
Leave a Reply