বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মামলার রায় আগামীকাল বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর)। বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামানের আদালত এ রায় ঘোষনা করবেন। মামলার ১০ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলে আশা প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষ। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা মনে করেন, সব আসামি বেকসুর খালাস পাবেন।
আদালত সূত্র জানায়, ১ জানুয়ারি বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালত ১০ আসামির বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশগ্রহণ, হত্যার ষড়যন্ত্র এবং আসামিদের পালাতে সাহায্য করার অভিযোগে অভিযোগ গঠন করেন। ৮ জানুয়ারি থেকে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। মোট ৭৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ৭৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। বাকি একজন সাক্ষী বিদেশে থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।
মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে শুধু জামিনে আছেন নিহত রিফাতের স্ত্রী ও মামলার সাত নম্বর আসামি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। পলাতক রয়েছেন মামলার ৬ নম্বর আসামি মো. মুসা। বাকি ৮ আসামি রয়েছেন বরগুনার জেলা কারাগারে। কারাগারে থাকা আসামিরা হলেন- রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি, আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুন। আসামিদের মধ্যে পলাতক মুসা ব্যতীত বাকিরা রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
নিহত রিফাতের মা ডেইজি আক্তার বলেন, রিফাতকে আর ফিরে পাব না। এতদিন ধরে হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক রায়ের অপেক্ষায় আছি। আমাদের প্রত্যাশা আদালত সব আসামিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবেন। মামলার অন্যতম আসামি রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির বাবা মো. মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, মিন্নির আইনজীবীরা যে যুক্তিতর্ক আদালতে উপস্থাপন করেছেন, সেই যুক্তিতর্ক খণ্ডন করতে রাষ্ট্রপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে। মিন্নি যে নির্দোষ এটা আদালতকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন আইনজীবীরা। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেই বলছি, মিন্নি বেকসুর খালাস পাবে।
মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, যদি কেউ কাউকে খুনের পরিকল্পনা করে তাহলে সে কখনও তাকে বাঁচাতে যায় না। মিন্নি যেভাবে রামদার নিচে গিয়ে তার স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে এবং পরে রিফাতকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে; এতেই বোঝা যায় মিন্নি নির্দোষ। মিন্নি কোনোভাবেই হত্যায় জড়িত নয়। আমরা মনে করি, আদালতকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। তাই আশা করছি মিন্নি বেকসুর খালাস পাবে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও বরগুনা জেলা দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ভূবন চন্দ্র হালদার বলেন, সাক্ষীদের সাক্ষ্য থেকে শুরু করে সব ধরনের যুক্তিতর্ক ও প্রমাণাদির মাধ্যমে আমরা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছি। আমরা আশা করছি ১০ আসামির প্রত্যেকের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে।
Leave a Reply